প্রকাশিত: ০৮/০৬/২০১৬ ৮:১০ এএম

f54-300x168চট্টগ্রামে ধরাপড়া সেলিনার পারিবারিক ব্যবসা ইয়াবা
বিশেষ প্রতিবেদক
রাজনীতিক, সমাজ সেবক বা ব্যবসায়ী কিংবা পর্দানশীল মহিলা- যে নামেই নিজেকে পরিচিত করুক না কেন আসলে সেলিনা শেলিরা পারিবারিকভাবেই ইয়াবা ব্যবসায়ী। তার স্বামী শাহ আজম শুটকি ব্যবসার আড়ালে যে বাস্তবে ইয়াবা ব্যবসা করেন এবং স্বল্প সময়ে কাড়ি কাড়ি অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন, তার রহস্য উম্মোচিত হয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে।
গত বৃহ¯পতিবার রাতে চট্টগ্রাম শহরের বায়েজিদ থানায় প্রায় এক কোটি টাকা মূল্যের ৩৬ হাজার পিস ইয়াবা টেবলেট, নগদ ৪৮ লাখ টাকা ও নম্বরবিহীন একটি প্রাইভেট কারে দুই সহযোগীসহ ধরা পড়ে হ্নীলার ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার জামাল আহমদ এর ছেলে শাহ আজমের স্ত্রী সেলিনা আকতার শেলি। পরে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পায় পুলিশ। পাঁচলাইশ জোনের এসি আসিফ মহিউদ্দন ও বায়েজিদ থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন মিডিয়াকে বলেছেন- ইতোমধ্যে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নিশ্চিত হয়েছে যে, সেলিনা শেলির পারিবারিক ব্যবসা ইয়াবা। শুটকি ব্যবসার আড়ালে তারা ইয়াবা ব্যবসা করেই গত ৩/৪ বছরে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
সূত্র জানিয়েছে, শাহ আজম ও তার পিতা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভূক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী। সে বিভিন্ন সময় ইয়াবাসহ র‌্যাবের হাতে ধরা পড়ে। সেলিনা শেলির শ্বশুড় পরিবার ছাড়াও বাপের পরিবারের নারীসহ প্রাপ্তবয়স্ক প্রায় সকলেই ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত। তার বাবা নুর মোহাম্মদও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভূক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী ছিলেন। শেলির মা মিনারা আকতার প্রায় ৩ বছর আগে লেদাস্থ বাড়ী থেকে ৫০ হাজার পিস ইয়াবাসহ র‌্যাবের হাতে ধরা পড়েন। এরপর র‌্যাবের সোর্স সন্দেহে ১০ম শ্রেণীর ছাত্র সরওয়ারকে প্রকাশ্যে দিনদুপুরে পিটিয়ে হত্যা করে নুর মোহাম্মদ। এর প্রায় ৬ মাস পর টেকনাফের জলিলের দ্বীপে ইয়াবার চালান আনতে গিয়ে নুর মোহাম্মদ র‌্যাবের সাথে বন্দুক যুদ্ধে মারা যান। এসময় ঘটনাস্থল থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়। শেলির মা মিনারা আকতার নুর মোহাম্মদের তিন স্ত্রীর মধ্যে প্রথম। ংধষরহধ ুধনধমিনারা একজন মিয়ানমার নাগরিক। তিনি এখনও ভোটার হতে পারেননি। শেলির শ্বশুড় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভূক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী জামাল আহমদ বর্তমানে হ্নীলা ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার। শেলির চাচা নুরুল হুদা ৮ নং ওয়ার্ডের মেম্বার। ইয়াবার টাকায় কিনে নিয়েছেন ক্ষমতা- এমনই অভিযোগ স্থানীয়দের। রোহিঙ্গা মিনারা বেগমের ৩ সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় শেলি। মিনারার তৃতীয় সন্তান এখনও অপ্রাপ্ত বয়স্ক। ইয়াবা ব্যবসায় জড়ানোর সুযোগ হয়নি। তবে তার বড় ছেলে নুরুল আমিন ফাহিমের বিরুদ্ধে রয়েছে পরিবারের ইয়াবা ব্যবসায় সহযোগিতার। ফাহিম মূলত বিভিন্ন মহলের সাথে ‘সমঝোতা’ করে দেয়।
ইতোমধ্যে টেকনাফের পুলিশ, সংবাদকর্মীসহ বিভিন্ন প্রায় ২৪ জনকে মোটর সাইকেল কিনে দিয়েছে ফাহিম। ফাহিমের সাথে কক্সবাজার জেলা শহরে কর্মরত বেশ কয়েকজন টিভি সাংবাদিকের দহরম সম্পর্ক রয়েছে। টেকনাফের ‘শ’ অধ্যাক্ষরের এক নব্য সংবাদকর্মীর মাধ্যমে জেলা শহরের এসব সংবাদকর্মীদের সাথে যোগাযোগ বাড়ে তার। যাদের কয়েক জনের দখলে এখন দামি মটর সাইকেল রয়েছে। জনশ্র“তি রয়েছে, আলোচিত বেসরকারি এসব টেলিভিশনের প্রতিনিধি হিসেবে প্রশাসনের অনুকম্পা পাওয়ায় অনেক সময় ইয়াবা পরিবহন ও নানা সমজোতায় তাদের ব্যবহার করা হয় এবং বিনিময়ে এসব টিভি সংবাকর্মীরা মোটা অংকের নজরানা পেয়ে থাকেন।  এদের চালচলন ও অর্থ খরচের চিত্রে অভিযোগের সত্যতা মেলে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।
এছাড়াও, সুবিধা পেতে ফাহিম বর্তমানে উপজেলা ছাত্রলীগের মূল্যবান একটি পোস্ট দখলে নিতে চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় ছাত্রলীগ কর্মীদের। এখানে সেই ‘শ’ অধ্যাক্ষরের যুবকটি তার ছায়া হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলেও উখে করেন তারা। নুর মোহাম্মদের অন্যান্য ভাই ও অন্যান্য স্ত্রীর সস্তানসহ শেলির বাপের দুটি পরিবারের প্রায় প্রত্যেকের বিরুদ্ধে বহু মামলাও রয়েছে। এসব মামলায় কেউ পলাতক, কেউ জেলে এবং কেউবা বহু মামলার আসামী হয়েও বীরদর্পে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।

পাঠকের মতামত

বান্দরবানে কেএনএফের আস্তানায় যৌথ বাহিনীর অভিযান, নিহত ৩

বান্দরবানের রুমা উপজেলার রনিন পাড়ার কাছে ডেবাছড়া এলাকায় কেএনএফের একটি আস্তানায় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর ...

সিভিল সার্জন কার্যালয়ে স্বাস্থ্য সহকারী পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে গিয়ে আটক ১

চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ে স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় প্রক্সি দিয়ে উত্তীর্ণ হলেও মৌখিকে ধরা ...